বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ৪০ কোটি ছাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন, বিশ্ব জরিপ সংস্থার মুখপাত্র সাইয়্যিদ মুহম্মদ আকতার ই-কামাল। তিনি বলেন, বিগত ২৭ বছরে জনসংখ্যার একই হিসাব দেওয়া হচ্ছে। এর পেছনে কাজ করছে বিভিন্ন এনজিও। বুধবার (১৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের জনসংখ্যার নতুন এই চিত্র প্রকাশ করে বিশ্ব জরিপ সংস্থা।
এদিকে আকতার ই-কামাল বলেন, ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১৭ কোটি। এরপর থেকে বিগত ২৭ বছরে জনসংখ্যার একই হিসাব দেওয়া হচ্ছে। তারপর প্রত্যেক সরকারই বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রকৃত সংখ্যা লুকিয়ে রাখতে চেয়েছে। এর পেছনে সরকারের পাশাপাশি কাজ করেছে বিভিন্ন এনজিও।
দেশের জনসংখ্যা কমাতে বিদেশি দাতা সংস্থা কর্তৃক দেওয়া তহবিলের সঠিক ব্যবহার হয়েছে এটা প্রমাণ করাই ছিল জনসংখ্যা কম দেখানোর আসল উদ্দেশ্য। জনসংখ্যা কমানো যায়নি বা জনসংখ্যা বেশি দেখালে বিদেশি তহবিল আসা বন্ধ হয়ে যাবে- এমন আশঙ্কা থেকেই জনসংখ্যার প্রকৃত সংখ্যা লুকানো হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
স্বাধীনতার পর থেকে জনসংখ্যা কত গুণ বেড়েছে তার একটা হিসাব আমরা করেছি- পাকিস্তান আমলে মোট জনসংখ্যা ছিল ৯ কোটি। তখনকার হিসাবে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ৫ কোটি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ সাহেব বললেন- বাংলাদেশের জনসংখ্যা সাড়ে সাত কোটি। (স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম আদমশুমারি ১৯৭৪ অনুযায়ী- বাংলাদেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটি ৬৪ লাখ। )
এরপর জিয়াউর রহমান (১৯৭৭ সাল) ক্ষমতায় আসার পর বললেন- বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৯ কোটি। এরপর এরশাদ (১৯৮২ সাল) ক্ষমতায় বসার পর বললেন- বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১১ কোটি। এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ঘোষণা দিল, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি। তারপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে বলল, বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। সেই ১৭ কোটি থেকে দেশের জনসংখ্যা কি আর বাড়েনি?
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি ১৯৬৯ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তৎকালীন ২৭ বছরের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দেখি, তাহলে সেটা দেখতে পাই সোয়া তিন গুণেরও (৩.২৬ গুণ) বেশি। তাহলে ১৯৯৬ থেকে ২০২৪ সালের এই ২৮ বছরেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ৩/৪ গুণ বাড়ার কথা। কারণ পূর্বের চেয়ে গড় আয়ু বেড়েছে।
বর্তমানে ৪০ কোটি জনসংখ্যা ধরলে সেটা আড়াই গুণেরও কম (২.৩৫ গুণ) ধরা হয়। কাজেই বাস্তবতা হচ্ছে- বর্তমানে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ৪০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। আর সোয়া তিন গুণ হিসাব করলে জনসংখ্যা হয় প্রায় ৫৫ কোটি। বিবৃতিতে আদমশুমারি সম্পর্কে সরকারি তথ্য প্রকৃতপক্ষে সম্পূর্ণ ভুল ও প্রতারণামূলক বলেও উল্লেখ করা হয়।